Saturday, July 20, 2013

কোরআন ও হাদিসের আলোকে এতিম প্রতিপালন

মুহাম্মদ ওসমান গনি
সম্পাদনা : ইকবাল হোছাইন মাছুম

এতিম কে?
এতিম শব্দটি আরবি, যার অর্থ নি:সঙ্গ। একটি ঝিনুকের মধ্যে যদি একটি মাত্র মুক্তা জন্ম নেয় তখন একে দুররে এতিম বা নি:সঙ্গ মুক্তা বলা হয়। ইবনু মন্জুর লিসানুল আরব অভিধানে বর্ণনা করেছেন।

اليتيم: الذي يموت أبوه حتى يبلغ الحلم، فإذا بلغ زال عنه اسم اليتيم، واليتيمة ما لم تتزوج، فإذا تزوجت زال عنها اسم اليتيمة.

অর্থ: এতিম এমন বাচ্চাকে বলা হয় যার পিতা মারা গিয়েছে, বালেগ হওয়া অবধি সে এতিম হিসাবে গণ্য হবে, বালেগ হবার পর এতিম নামটি তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আর মেয়ে বাচ্চা বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত এতিম বলে গণ্য হবে বিয়ের পর তাকে আর এতিম বলা হবে না।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: বালেগ হওয়ার পর আর কেউ এতিম থাকে না। মেশকাত: পৃষ্ঠা নং ২৮৪
লিসানুল আরবে আরো বর্ণিত আছে যে, মানুষের মাঝে এতিম হয় পিতার পক্ষ থেকে আর চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে এতিম হয় মায়ের পক্ষ থেকে।

যে সন্তানের বাল্যকালে তার মাতা মারা যায়, কিন্তু পিতা বেঁচে থাকে তাকে এতিম বলা হবে না।

এতিম প্রতিপালনের ফজিলত:

আল্লাহ তাআলার প্রিয় হাবিব, আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ ইন্তেকাল করেন এবং ছয় বছর বয়সে মা আমিনাকেও হারান। তারপর তার লালন পালনের দায়িত্ব নিলেন দাদা আব্দুল মুত্তালিব। কিন্তু তিনিও মাত্র দুই বছর পর এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। সে হিসাবে তিনি ছিলেন সর্বদিক দিয়েই এতিম।

তাই আল্লাহ তাআলা বলেন: أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيمًا فَآَوَى ﴿6﴾ وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَى ﴿7﴾ وَوَجَدَكَ عَائِلًا فَأَغْنَى ﴿8﴾فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ ﴿9﴾ )الضحى:6-9)


Tuesday, April 16, 2013

এতিমের হক প্রতিষ্ঠায় ইসলাম

মুফতি আইনুল ইসলাম কান্ধলবী
এ কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে আল্লাহ পাক এতিমদের হক আদায়ের ব্যাপারে বিশেষ তাগিদ করেছেন। কেননা প্রাক-ইসলামিক যুগে এতিমদের প্রতি জুলুম করা হতো অনেক বেশি। প্রাক-ইসলামিক যুগে বর্বরতার শিকার হতো অসহায় নারী, অনাথ এতিম, মিসকিন এবং কন্যাসন্তান। নারীদের কোনো অধিকার ছিল না সমাজে। এতিমদের ধনসম্পদ তাদের অভিভাবকরা আত্মসাৎ করে ফেলত এবং কন্যাসন্তানদের বর্বর পৌত্তলিকরা জীবন্ত কবরস্থ করত।

প্রিয়নবী (সা.)-এর আবির্ভাবের মাধ্যমে আল্লাহপাক সমাজের এই দুস্থ, বিপদগ্রস্ত মানুষদের বর্ণনাতীত দুঃখ-কষ্ট দূরীভূত করার নির্দেশ দিলেন। ফলে মরণাপন্ন মানবতা পুনর্জীবন লাভ করল। সভ্যতার ক্রমবিকাশ শুরু হলো।